রবিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
প্রকাশিত: ১০:৩৬ ৬ আগস্ট ২০২৪
আজ মঙ্গলবারের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্দলীয় সরকার গঠনের ব্যাপারে সমাধান করতে হবে। আমি রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, কাল বিলম্ব না করে আপনি আজকের মধ্যে…চব্বিশ ঘণ্টা প্রায় হয়ে যাচ্ছে…২টার মধ্যে দয়া করে অবিলম্বে এই সংসদ ভেঙে দিয়ে অন্তবর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করুন। অন্যথায় দেশে আবার রাজনৈতিক শূন্যতা দেখা দিতে পারে।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছাত্ররা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান হিসেবে চান, আপনারা সমর্থন করেন কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখানে আমাদের সমর্থন করার ব্যাপার নয়। এটা হচ্ছে যে যখনই প্রেসিডেন্ট আমাদের কাছে প্রস্তাব দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নামের জন্য, আমরা সেই সময়ে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম দেব।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখানে এখন কনস্টিটিউশনাল হেড অব স্টেট প্রেসিডেন্ট…উনি হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রধান। তাঁরই একমাত্র এখতিয়ার আছে এ ধরনের ব্যবস্থাগুলো নেওয়ার জন্য। সুতরাং যখন রাষ্ট্রপতি আমাদের ডাকবেন, তখনই আমাদের যেটা নামের প্রস্তাব আমরা দেব। তবে একটা কথা বলে দিই, ছাত্রদের প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা আছে…তাঁদের আন্দোলনের প্রতি একাত্মবোধ করেছি, তাঁদের সঙ্গে একাত্মবোধ করছি। এখানে বলব, সর্বদলীয় ব্যাপারটা গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’
‘গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুঃখ প্রকাশ করছি, এই বিজয়ের পরে কিছুসংখ্যক দুস্কৃতিকারী তারা কয়েকটি টিভি সেন্টারে অগ্নিসংযোগ করেছে, ভাঙচুর করেছে। এটা মুক্ত স্বাধীনতা ও স্বাধীন গণমাধ্যমের চিন্তার বিরুদ্ধে। আমরা সব সময় ফ্রিডম অব প্রেসে বিশ্বাস করি, আমরা বিশ্বাস করি, ব্যক্তি, মানুষ, সংগঠন, বিশেষ করে সাংবাদিকেরা তাঁদের মত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করবেন। সেই বিশ্বাসে আমরা মনে করি যে যাঁরা এই সমস্ত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকেছেন, তাঁরা এসব থেকে বিরত থাকবেন এবং সংবাদপত্রের যে মুক্ত ধারা, তা অব্যাহত রাখবেন।’
‘শিক্ষার্থীদের স্যালুট’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাতে চাই শহীদদের। ছাত্র ও জনতা, যাঁরা দীর্ঘ ১৫–১৬ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। আমরা শিক্ষার্থীদের ও তাঁদের নেতাদের অভিবাদন জানাতে চাই, স্যালুট জানাতে চাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রাহুমুক্ত হয়েছি, আমরা ফ্যাসিবাদের যে মূল হোতা, জনগণ তাকে সরিয়েছে…সে পালিয়েছে, তাকে বিতাড়িত করেছে। সেখানে এই বিজয় নিঃসন্দেহে বড় বিজয়, সেই বিজয়টাকে কনসোলেটেড করতে হবে।’
‘বেগম জিয়ার বার্তা’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) সবাইকে সবাই শান্ত হতে বলেছেন। এখানে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি যেন না হয়, যাতে অর্জিত বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে যায় কেউ। জনগণকে সর্তক থাকতে বলেছেন, এই বিজয় যেন কেউ ছিনিয়ে নিতে না পারে।’
খালেদা জিয়া কবে নাগাদ জনসমক্ষে আসবেন, প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, ম্য্যাডাম খুব অসুস্থ। আমি গতকাল রাতে দেখা করেছি...সুতরাং যখনই তিনি ফিট মনে করবেন, সুস্থ বোধ করবেন, তখন তিনি জনগণের সামনে উপস্থিত হবেন।’
‘তারেক রহমান কবে ফিরবেন’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি (তারেক রহমান) যখনই মনে করবেন হি ক্যান কাম ব্যাক….আমরা ইতিমধ্যে অনুরোধ জানিয়েছি যে দ্রুত চলে আসেন। সেই ব্যবস্থা হবে ইনশাল্লাহ।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের দোতলার একটি কক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে সশরীর মহাসচিবসহ পাঁচ সদস্য ছিলেন। বিদেশে অবস্থান করা আবদুল মঈন খান, সালাউদ্দিন আহমেদ ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।
বিজ্ঞাপন