সোমবার , ১১ আগস্ট, ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:৪৯ ৩ আগস্ট ২০২৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার (২ আগস্ট) রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে এসে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান। ১৬ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ওই ফেসবুক লাইভে ফাতেমা খানম বলেন, “চট্টগ্রামে যাদের সঙ্গে জুলাই আন্দোলন করেছি, তারাই আজ নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বয়ান তৈরির চেষ্টা করছেন। নারীদের ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন। এগুলো নেওয়া যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রামের কিছুসংখ্যক মানুষের স্বার্থের কাছে আমাদের রাজনীতি হেরে গেছে। আন্দোলনের সম্মুখসারির অনেকে এখন নেই। এর জন্য দায়ী কিছু ভাই-ব্রাদার, যারা কেন্দ্রের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চট্টগ্রামে একটার পর একটা কোরাম বানিয়েছেন।”
ফাতেমা খানম অভিযোগ করেন, “আমাদের লড়াই ছিল ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে, কিন্তু এখন নিজেদের লোকদের সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে। চট্টগ্রামে মেয়েদের নিয়ে যে নোংরামি হয়, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এই কাজ আমাদের আশেপাশের মানুষরাই করে। যাদের আমরা ভাই ডেকেছি, তারাই আজ আমাদের হেয় করছে।”
তিনি বলেন, “এখন আর আমার পক্ষে রাজনীতি করা সম্ভব নয়।”
ফাতেমা সরাসরি নাম উল্লেখ করে বলেন, “চট্টগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন খান তালাত মাহমুদ রাফি, রাসেল আহমেদ, রিজাউর রহমানসহ অনেকেই। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে তাদের যে অবস্থান নেওয়া দরকার ছিল, তা তারা নিতে পারেননি।”
তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা যেসব নোংরামি করছেন, তা বন্ধ করুন। মেয়েদের রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্য যারা আজ কুৎসা রটাচ্ছেন, তারা এই আন্দোলনের ক্ষতি করছেন।”
লাইভের পরদিন শনিবার (৩ আগস্ট) ভোর ৪টা ৫৬ মিনিটে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে ফাতেমা আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, “রাজনীতির অঙ্গনে কখনো শূন্যস্থান দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কেউ একটি পথ থেকে সরে দাঁড়ালে, কেউ না কেউ সেই স্থান পূরণ করে। তবে চট্টগ্রামের নারী রাজনীতিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
তিনি লেখেন, “এই শহরে যদি কোনো নারী রাজনীতিতে আসতে চান, আমি জানি না তার ভাগ্যে কী আছে। প্রতিপক্ষের থেকে যত না বাধা আসবে, তার চেয়ে বেশি সহিংসতা ও অপমান তাকে সহ্য করতে হবে নিজের দলের ভাইদের কাছ থেকেই। এই অভিজ্ঞতা আমার নিজের।”
ফাতেমা খানম বর্তমানে চট্টগ্রাম কলেজের ইতিহাস বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি চট্টগ্রাম নগর কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি বাদে দেশের সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। সংগঠনটির সভাপতি রিফাত রশিদ রাজধানীর শাহবাগে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
বিজ্ঞাপন