শনিবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৯:০১ ২৭ আগস্ট ২০২৪
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দখলদারিত্বের নতুন নজির দেখিয়েছে বিএনপি; জেলা প্রেসক্লাবের কমিটিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাতিল ঘোষণা করেছে। এ কাণ্ড ঘটিয়েছে শেরপুর জেলা বিএনপি। পরে অবশ্য সমালোচনার মুখে ‘বাতিলের ঘোষণা’ বাদ দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সংশোধন করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে ক্ষমতার পালাবদলের হিড়িকের মধ্যে গত ২২ আগস্ট এনটিভির কাকন রেজাকে সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাসুদ হাসান বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে শেরপুর প্রেসক্লাবের ২২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
এর চার দিনের মাথায় গতকাল সোমবার রাতে জেলা বিএনপির প্যাডে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. মাহমুদুল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ওই কমিটি বাতিল ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শেরপুর প্রেসক্লাবের কমিটির বিষয়ে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ কেউ অবগত নন। তাই ওই কমিটি বাতিল ঘোষণা করা হলো। পরে সব সাংবাদিকের সঙ্গে সমন্বয় করে একটি সুন্দর ও শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে।’
বিএনপির এই অবিমৃষ্যকারী, এখতিয়ারবহির্ভূত ও নজিরবিহীন কাণ্ডে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন গণমাধ্যমকর্মীসহ সচেতন মহল। সাংবাদিকদের পেশাজীবী সংগঠনকে একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ‘বাতিল ঘোষণায়’ সমালোচনার ঝড় ওঠে।
বিএনপির এই কাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে শেরপুর জেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি-সম্পাদক এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসক্লাব একটি অরাজনৈতিক ও সর্বজনীন পেশাজীবী সংগঠন। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে শ্রদ্ধা করি। তবে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের শামিল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টাইপিং মিসটেকের কারণে কমিটি বাতিল লেখা হয়েছে। ওটা আমরা আবার রিভাইস দিচ্ছি, কারেকশন করে দিচ্ছি। আমরা অবগত নই, সে পর্যন্ত থাকবে। কমিটি বাতিলের কথাটা বাদ যাবে।’
এদিকে ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, ‘আমি প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি পেয়েছি, এটা দুঃখজনক। এটা তো করতে পারে না। আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি। তিনি আরও বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাব বা কোনো জেলা প্রেসক্লাব বিএনপির অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন না, বিএনপির পেশাজীবী কোনো সংগঠনও না। এটাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগই নাই।’
সমালোচনার মুখে পরে সোমবার রাতেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি সংশোধন করে জেলা বিএনপি। সেখানে কমিটি বাতিলের লাইনটি ছিল না। তবে, ‘পরবর্তীতে সকল সাংবাদিকের সাথে সমন্বয় করে একটি সুন্দর ও শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হবে’ এই অংশটি রাখা হয়।
বিজ্ঞাপন