শনিবার , ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৯:২২ ১৭ আগস্ট ২০২৪
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে পাওয়া গেছে চিঠি। সেখানে আফরোজ আক্তার সেজুতি নামের এক মেয়ে এক খ্রিস্টান ছেলেকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চিঠি লিখেছেন।
শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টায় ৯টি দান সিন্দুক থেকে রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সঙ্গে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও বিভিন্ন চিরকুট। এখন চলছে গণনার কাজ। গণনায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ৩৫০ জনের একটি দল।
এবারে গণনার সময় একজন মুসলিম নারীর খ্রিস্টান এক ছেলেকে জীবনসঙ্গী করে পাওয়ার ইচ্ছা জানিয়ে লেখা চিঠি মিলেছে মসজিদের সিন্দুকে। চিঠিতে লেখা আছে, ‘আসসালামু আলাইকুম হুজুর। আমার নাম আফরোজ আক্তার সেজুতি, আমি একজনকে অনেক ভালোবাসি, সারাদিন তার চিন্তা আমার মাথায় ঘুরে। ওর কথা মনে পড়লে অনেক কান্না আসে। আমি আমার পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারি না। ও আমার ব্যাপারে কিছুই জানে না, আমি ওর ব্যাপারে সব জানি। ও খ্রিস্টান আমি মুসলমান, আমি আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করি। প্রতিদিন নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে বলি যাতে ও মুসলমান হয়ে যায়, আমি চাই ও আমার জন্য হালাল হয়ে যাক। আল্লাহ ওকে আমার জন্য হালাল করে দেন, আমি ওর প্রতি দুর্বল ওকে কিছুতেই ভুলতে পারি না। আমি ওকে ভুলতেও চাই না। আমার অনেক ভয় লাগে, ও যেন অন্য কারো হয়ে না যায়। আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন তকদিরে দিয়ে দোয়া করবেন। আমার সালাম নিবেন।’
পারভীনকে জীবনসঙ্গী করে পেতে পাগলা মসজিদের দানবাক্সে সাইফুলের চিঠি
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকা, চলছে গণনা
আজ কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল সাইফুল ইসলামের নামের এক প্রেমিকের চিঠি সিন্দুকে পাওয়া যায়। এমন আরেকটি চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আল্লাহ আমি যেন একটা মানসম্মত নাম্বার পাই একটা ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারি। আমার মাথার সব খারাপ চিন্তা দূর হয়ে যায়। আল্লাহ আমার মা-বাবারে ভালো রাখেন। আমি যেন রফিকুল ইসলামী কলেজে ভর্তি হতে পারি।’
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আপনারা জানেন কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অন্যতম একটি জায়গা। সকল ধর্মের মানুষ এখানে দান করে থাকেন, মানত করেন। আশা করা যাচ্ছে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে। তাদের দানের অর্থ দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স করা হবে যেখানে একসাথে ৩০ হাজার মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন।
প্রতি তিন মাস পর পর দানবাক্সের সিন্দুক খোলা হয়। এবার ৩ মাস ২৭ দিন পর দান সিন্দুক খোলা হয়েছে। গণনা চলছে রেকর্ড ২৮ বস্তা টাকার। এছাড়া পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন চিরকুট।
বিজ্ঞাপন