রবিবার , ২৭ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৬:৪২ ২৬ এপ্রিল ২০২৫
সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে ফিরছেন বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান।
ঢাকা-লন্ডনের নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্রগুলো মোর নিউজ-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রের বরাতে জানা গেছে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও সম্পূর্ণ আশঙ্কামুক্ত নয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, কাতারের একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি চলছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ৩০ এপ্রিল, বুধবারের মধ্যে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গী হবেন দুই পুত্রবধূ—জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়াকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও ঝুঁকিমুক্ত নয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এবং তিনি এপ্রিলের শেষ সপ্তাহেই দেশে ফিরতে ইচ্ছুক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, মির্জা ফখরুলের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার লন্ডন ও দোহায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তাকে দেশে আনা হবে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির দুই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। পরবর্তীতে কোভিড-১৯ মহামারির সময় তাকে সরকার বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক বিশেষ আদেশে তিনি মুক্তি লাভ করেন। একইসঙ্গে আদালত তার বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতির মামলাগুলোর রায় বাতিল করে।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে নেওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি তাকে তারেক রহমানের বাসায় নেওয়া হয়। দীর্ঘ প্রায় ছয় বছরের মধ্যে এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঈদ উদ্যাপন করেছেন খালেদা জিয়া। এর আগে কারাবন্দি অবস্থায় টানা চারটি ঈদ কেটেছিল তার কারাগার বা হাসপাতালেই।
বর্তমানে তিনি লিভার সিরোসিস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার সর্বশেষ বিদেশ সফর ছিল ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই, যখন তিনি লন্ডন যান। এরপর দীর্ঘ সাত বছর তিনি আর বিদেশ সফর করেননি।
বিজ্ঞাপন