রবিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৯:৪২ ১৬ অক্টোবর ২০২৪
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জাতীয় শোক, শিশুসহ আটটি দিবস বাতিল করছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত সেপ্টেম্বরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। বুধবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। সেই সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন দিবস যুক্ত হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার এসব দিবস চাপিয়ে দিয়েছিল। জাতীয় দিবস বলতে এমন দিবস যেটি জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সবাই ধারণ করবে। যেমন বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছু দিবসকে বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে আরও এমন দিবস বাতিল করা হবে। পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নতুন দিবসও যুক্ত হতে পারে।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৭ মার্চ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ দিবস, তবে জাতীয় দিবস হওয়ার মতো না। আওয়ামী লীগ অনেক দিবসকে নষ্ট করে ফেলেছে। তারা শেখ মুজিবের মূর্তি করে পূজা শুরু করেছিল। আমরা তো ৭ মার্চ একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছি না। শেখ মুজিবের রহমানের গুরুত্বকে ইতিহাস থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছি না। অবশ্যই ইতিহাসে ৭ মার্চ থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা না। আমাদের এই ভূখণ্ডের লড়াইয়ের ইতিহাসে কেবল একজন না, অনেকেরই ভূমিকা রয়েছে। আমাদের ইতিহাস কিন্তু শুধু ১৯৫২ থেকেই শুরু হয়নি। আমাদের ইতিহাসে দীর্ঘ লড়াই আছে, ব্রিটিশবিরোধী লড়াই আছে, ১৯৪৭ সালের লড়াই আছে।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, আমাদের ইতিহাসে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, আবুল হাসেম, যগেন মণ্ডল, মাওলানা ভাসানী এমন অনেক মানুষের লড়াই আছে। আমরা তো মনে করি এখানে একজন জাতির পিতা না, বরং অনেক ফাউন্ডিং ফাদার’স (জাতির পিতা) রয়েছে। যাদের অবদানের ফলে আমরা এই স্বাধীন ভূখণ্ড, স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। সুতরাং, জাতির পিতা হিসেবে আমরা একটা দলের বা একজন ব্যক্তিকে সীমাবদ্ধ করতে চাই না।
তিনি বলেন, ইতিহাসের বহুমুখীতা আছে। যেটিকে আওয়ামী লীগ এতদিন অস্বীকার করেছে। তারা মাওলানা ভাসানীর অবদানকে অস্বীকার করেছে, অথচ আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। এখন সময় এসেছে সবার ভূমিকা স্মরণ করার।
উল্লেখ্য, বাতিল হতে যাওয়া আটটি দিবসের মধ্যে পাঁচটিই শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত। এরমধ্যে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস।
এছাড়াও বাতিলের তালিকায় আছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস এবং ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।
বিজ্ঞাপন