সোমবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ৩১ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৪৪ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভার তিন সদস্য আজ সোমবার শপথ নিয়েছেন। রাজধানী কাঠমান্ডুর প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনের খোলা মঞ্চে আয়োজিত এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেল তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করান। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সুপরিচিত আইনজীবী ও দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের কর্মী ওম প্রকাশ আর্যাল। তিনি একই সঙ্গে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ও সামলাবেন। দুর্নীতি ও মানবাধিকারবিষয়ক মামলা পরিচালনায় তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে।
নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাবেক পরিচালক কুলমান ঘিসিং জ্বালানি, অবকাঠামো, পরিবহন ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। বিদ্যুৎ ঘাটতি ও দীর্ঘদিনের লোডশেডিং দূরীকরণে তাঁর ভূমিকার জন্য তিনি জনগণের কাছে পরিচিত মুখ।
অর্থনীতিবিদ ও সাবেক অর্থসচিব রমেশ্বর খানাল অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি মূলত দেশের বেকারত্ব মোকাবিলায় কাজ করবেন। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, নেপালে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের প্রায় এক–পঞ্চমাংশ বেকার, যা অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে গত ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর নেপালজুড়ে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ৭২ জন নিহত হন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পার্লামেন্ট ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ একাধিক স্থাপনা। এই ঘটনার জের ধরেই প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন।
এরপর গত শুক্রবার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি। বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর কঠোর অবস্থান এবং প্রভাবশালী গোষ্ঠীর স্বার্থের বিপরীতে কাজ করার জন্য তিনি ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন। তবে রাজনৈতিক চাপের মুখে বিচারপতির পদ থেকে তাঁকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বলেছেন, ছয় মাসের বেশি এই পদে থাকবেন না। আগামী বছরের ৫ মার্চ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন।
বর্তমানে কারকি ও তাঁর মন্ত্রিসভার সামনে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো সংস্কার, অর্থনৈতিক সংকট নিরসন এবং তরুণ প্রজন্মের আস্থা ফিরিয়ে আনার মতো গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একই সঙ্গে নেপালের গণতান্ত্রিক যাত্রা ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বও এখন এই অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বর্তেছে।
বিজ্ঞাপন