রবিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ০৮:১১ ১ অক্টোবর ২০২৪
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গজলডোবা বাঁধ খুলে উত্তরবঙ্গে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদো বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ভারতের সাথে বাংলাদেশের সকল আন্তর্জাতিক নদীর ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানান।
শুরুতে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় । সমাবেশে আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড.শেখ এ বি এম জাকির হোসেন ও জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সরকারী অধ্যাপক ইনজামুল হকসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
‘উত্তরের কান্না চুপ কেন বাংলা',
‘অবিলম্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই’ 'এত বৈষম্য কেন, উত্তরবঙ্গ কি দেশের বাহিরে', 'উত্তরবঙ্গের সাথে বৈষম্য, আর না আর না', 'তিস্তার পানি বণ্টন চাই, অন্যায় মেনে নিবো না ভাই', 'ভারতের আগ্রাসন কেন সহি? পানি বন্টনে চাই জবাবদিহি' ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যা-কার্ড প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, "ভারত উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিভিন্ন সময়েই আন্তর্জাতিক নদীর বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে কোনো সতর্কতাও দেওয়া হয় না। তাই আমরা দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। ভারত আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করেছে। তারা আমাদের অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। ভারতের সাথে সকল আন্তর্জাতিক নদীর ন্যায্য হিস্যা এখন সময়ের দাবি।"
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, "রংপুর বিভাগের মানুষের প্রাণের দাবি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। আমাদের দেশের সবচেয়ে অবহেলিত বিভাগ রংপুর। বিগত সরকার ভারতের কাছে নতজানু নীতির ফলে দিল্লির কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো না। ভারতকে নতজানু করে চলতো। রংপুরে বন্যা কৃত্রিম বন্যা। আমরা সরকারকে দ্রুততার সাথে আন্তর্জাতিক নদীর বিষয়ে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই। রংপুর সম্পদে ভরপুর একটি অঞ্চল, সরকার সেদিকে মনযোগ দিচ্ছে না। যার ফলে এলাকার মানুষ দরিদ্র থেকে যাচ্ছে। সেই এলাকা বাদ দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। রংপুর বিভাগের মানুষের প্রতি সকল অন্যায় দূর করতে হবে।’
জিওগ্রাফি এন্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের সরকারী অধ্যাপক ইনজামুল হক বলেন, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা বলে আমাদের সবসময় ভুল বুঝানো হচ্ছে। ভারতে এক তিস্তাতে বাধ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে ৩৪ টা যার মধ্যে ১৭ টা বাধঁ বাস্তবায়ন করেছে। একটা আন্তর্জাতিক নদীতে জায়গায় জায়গায় বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। এইরকম বাধেঁর ফলে তিস্তার পানি আসার কথা উত্তরবঙ্গের মধ্য দিয়ে কিন্তু সেটা পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাদেরকে পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়া হচ্ছে না। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার ভারতের কাছে নতজানু নীতির ফলে এটি বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা এই সরকারকে বলতে চাই দ্রুত এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের করতে। যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
সমাবেশে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ এ বি এম জাকির হোসেন বলেন, "বাংলাদেশের মানুষ সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে। তারা কখনো অন্যায় মেনে নেয় না। আন্তর্জাতিক নদী নিয়ে বাংলাদেশের সাথে ভারতের অন্যায় এই দেশের মানুষ মেনে নিবে না। আমরা ভারতের কাছে নদীর পানির ন্যায্যতা চাই। ভারত বার বার অন্যায়ভাবে নদীর পানি ছেড়ে এই দেশে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।"
বিজ্ঞাপন