রবিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩৫ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)-১ এর আওতাধীন সদর উপজেলার করটিয়া,মাদারজানি, ক্ষুদিরামপুর,বীরপুশিয়া,বিসিক শিল্প নগরী তারটিয়া ও পৌরশহরের একাংশে দিনদিন লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনের বেলায় সকাল ৮ টার দিকে বিদ্যুত চলে যায় আসে বিকাল ৫টায়। বর্তমানে বিউবো-১ এর আওতায় বর্তমান চাহিদা ২৪ মেগাওয়াট কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ১২ মেগাওয়াট। বিদ্যুত বিতরণ বিভাগ-১ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু দিনে নয় রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। এমন অভিযোগ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের।
এদিকে তীব্র গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা। এছাড়াও প্রচন্ড গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। গরমে ঘেমে জ¦র-কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই।
উপজেলার তারুটিয়া গ্রামের বাছিরণ নামের এক গৃহবধু জানায়,সকাল ৮ টার পর থেকে বিদ্যুৎ চলে যায় আসে বিকাল ৫ টায়। এছাড়াও রাতে ৭-৮ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। মানুষ কিভাবে ঘুম আসবে, একটু ঘুম আসলে গরমে ঘুম ভেঙে গেলে দেখা যায় বিদ্যুত নেই।
করটিয়া ইউনিয়নের মাদারজানি গ্রামের আলামিন মিয়া জানান, গত ৮-৯ দিন ধরে প্রচÐ গরমের পাশাপশি ব্যপক লোডশেডিং হয়। সারাদিন বিদ্যুৎ থাকেনা সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ আসে একটু ঘুমেরভাব আসলে গরমে যখন ঘুম ভেঙে গেলে দেখি বিদ্যুৎ নেই। এ অবস্থায় রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারিনা। ফলে কাজকর্ম করতে নানা অসুবিদায় পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, এমন লোডশেডিং আগে কখনো দেখিনাই। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
বিশিক শিল্প নগরী তারোটিয়া এলাকার বাসিন্দা মো. ময়নাল হক জানান, আগস্ট মাসে লোডশেডিং হতো কিন্তু গত কয়েকদিন যাবত বেশি লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ তো থাকেই না রাতের বেলায়ও ৭-৮ বার লোডশেডিং হয়। এ গরমে কিভাবে মানুষ বাঁচবো। তিনি আরো জানান,দিনের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকলেও এদিক সেদিক গাছতলায় বসে দিন পার করা যায়। রাতে যখন বিদ্যুত থাকেনা তখন খুব খারাপ লাগে। গত কয়েকদিন যাবত আমার ছোট ছেলে মেয়েরা রাতে ঘুমাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
ক্ষুদিরামপুর গ্রামের আজিরন নামের এক দর্জি জানান, আমার বাড়িতে দুটি শেলাই মেশিন দিয়ে গার্মেন্সের কাপড় সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করি। দিনে বিদ্যুৎ থাকেনা কাপড় সেলাইও করতে পারিনা, কাপড় ঠিকমতো ডেলিভারি দিতে না পরলে টাকাও পাইনা। কিভাবে যে সংসার চলবে সেই চিন্তায় আছি।
করটিয়ার মাসুদ মিয়া,তারোটিয়া অছিম উদ্দিন, মাদারজানি গ্রামের মোস্তাফা মুরাদসহ অনেকেই জানান, বিদ্যুৎ এর লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি বিদ্যুতের তারে ত্রæটি দেখা দিলে সহজে আর ঠিক হয়না। অফিসে বারবার ফোন করলেও লোকজন আসেনা,রাতে ত্রæটি দেখা দিলে তো লোক আরো আসেনা। তাদের এমন সেবার কারণে অনেক গ্রাহক ক্ষুব্দ প্রকাশ করলেও কিছু বলতে পারেনা।
টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড(বিউবো)-১ এর প্রকৌশলী খন্দকার কামরুজ্জামান বলেন, বিক্রয় কেন্দ্র-১ আওতায় ৪৮ হাজার ৫’শ গ্রাহক রয়েছে। এখানে চাহিদা রয়েছে ২৪ মেগাওয়াট অথচ বরাদ্দ আসে ১০-১২ মেগাওয়াট। এ ঘাটতি কিভাবে পুরণ করবো। তারপরেও যতটুকু সম্ভব গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।
অফিসে লোকবল বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই অফিসে লোকের প্রয়োজন ১০৩ জন রয়েছে ৩৯ জন। এর মধ্যে মাত্র ১৪ জন মেকানিক্যাল রয়েছে। এতা অল্প মেকানিক্যাল দিয়ে সর্বচ্চ সেবা দেওয়া কিভাবে সম্ভব,তবুও চেষ্ঠা করে যাচ্ছি।
বিজ্ঞাপন