রবিবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:০১ ১৮ নভেম্বর ২০২৪
প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চললেও জায়গাটি এখন পর্যন্ত তালাবদ্ধ রয়েছে। এতে খাবারের জন্য বাইরের হোটেল ও হল ডাইনিংয়ে ছুটছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাস ও এর পার্শ্ববর্তী হোটেলগুলোর তুলনায় কমমূল্যে ক্যাফটেরিয়ায় ভালো খাবার পাওয়া যায় । কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এটি বন্ধ থাকায় চড়া মূল্যে বাইরের হোটেল থেকে খাবার ও হল ডাইনিংয়ের মানহীন খাবার খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। ফলে আমাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
জানা যায়, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে ২০২৩ সালের ১২ মার্চ ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ করে দেন ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম। একই বছরের ২৬ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাফেটেরিয়া চালু হলেও মাস পেরোনোর আগেই তা আবার বন্ধ হয়ে যায়।
ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত তরুণদের সংগঠন 'কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ' (সিওয়াইবি) এর সভাপতি ত্বকী ওয়াসীফ বলেন, "ক্যাফেটেরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অন্যতম শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। সেখানে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা হবে, খাবার টেবিলে আড্ডা, আলোচনা ও কত স্মৃতি তৈরী হবে এটাই স্বাভাবিক । কিন্তু ইবির ক্যাফেটেরিয়া দীর্ঘদিন বন্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। আমরা ১০ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ক্যাফেটেরিয়া চালুসহ চারদফা দাবিতে প্রক্টর বরাবর স্মরকলিপি দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। ক্যাম্পাসে নবীনদের আগমন হয়েছে। ক্যাফেটেরিয়া চালু থাকলে হয়ত তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুটা আরেকটু সুন্দর হতে পারতো। তাই এই বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। ক্যাফেটেরিয়া চালুর পাশাপাশি সেখানে যাতে স্বাস্থ্য সম্মত খাদ্য ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়।"
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান বিশ্বাস বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া দীর্ঘদিন এভাবে বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত অসুবিধার ও হতাশার। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা পূরণে বাধা সৃষ্টি করছে না, বরং ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক কার্যক্রমকেও ব্যাহত করছে। অথচ এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতোই উদাসীন ভূমিকা রাখছে। শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসন যেন দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
জানা যায়, গত ১৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির নতুন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন। নতুন দায়িত্ব পেয়ে টিএসসিসির অডিটোরিয়ামকে প্রোগ্রামের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলাসহ ক্যাফেটেরিয়াকে পুনরায় চালু করার আশ্বাস দিলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায় নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া দ্রুত চালু করার জন্য ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। তবে ক্যাফেটেরিয়া দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেখানকার বর্তমান অবস্থা নাজেহাল। অনেক সংস্কারের প্রয়োজন আছে সেগুলো চলমান৷ সংস্কারের কাজ শেষ হলে খুব শীগ্রই চালু করা হবে।’
বিজ্ঞাপন